আল-হাক্কাহ
الْحَاقَّةُ
সে অবশ্যম্ভাবী ঘটনা,
مَا الْحَاقَّةُ
কী সে অবশ্যম্ভাবী ঘটনা ?
وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْحَاقَّةُ
আর কিসে আপনাকে জানাবে সে অবশ্যম্ভাবী ঘটনা কী ?
كَذَّبَتْ ثَمُودُ وَعَادٌ بِالْقَارِعَةِ
সামূদ ও ‘আদ সম্প্রদায় মিথ্যারোপ করেছিল ভীতিপ্ৰদ মহাবিপদ সম্পর্কে [১]।
فَأَمَّا ثَمُودُ فَأُهْلِكُوا بِالطَّاغِيَةِ
অতঃপর সামূদ সম্প্রদায়, তাদেরকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্ৰলয়ংকর বিপর্যয়কারী প্ৰচণ্ড চীৎকার দ্বারা,
وَأَمَّا عَادٌ فَأُهْلِكُوا بِرِيحٍ صَرْصَرٍ عَاتِيَةٍ
আর ‘আদ সম্প্রদায়, তাদেরকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ঝঞ্ঝাবায়ু দ্বারা [১] ,
سَخَّرَهَا عَلَيْهِمْ سَبْعَ لَيَالٍ وَثَمَانِيَةَ أَيَّامٍ حُسُومًا فَتَرَى الْقَوْمَ فِيهَا صَرْعَىٰ كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍ خَاوِيَةٍ
যা তিনি তাদের উপর প্রবাহিত করেছিলেন সাতরাত ও আটদিন বিরামহীনভাবে; তখন আপনি উক্ত সম্প্রদায়কে দেখতেন--- তারা সেখানে লুটিয়ে পরে আছে সারশূন্য খেজুর কাণ্ডের ন্যায়।
فَهَلْ تَرَىٰ لَهُمْ مِنْ بَاقِيَةٍ
অতঃপর তাদের কাউকেও আপনি বিদ্যমান দেখতে পান কি ?
وَجَاءَ فِرْعَوْنُ وَمَنْ قَبْلَهُ وَالْمُؤْتَفِكَاتُ بِالْخَاطِئَةِ
আর ফির‘আউন, তার পূর্ববর্তীরা এবং উল্টিয়ে দেয়া জনপদ পাপাচারে লিপ্ত ছিল [১]।
فَعَصَوْا رَسُولَ رَبِّهِمْ فَأَخَذَهُمْ أَخْذَةً رَابِيَةً
অতঃপর তারা তাদের রবের রাসূলকে অমান্য করেছিল, ফলে তিনি তাদেরকে পাকড়াও করলেন --- কঠোর পাকড়াও।
إِنَّا لَمَّا طَغَى الْمَاءُ حَمَلْنَاكُمْ فِي الْجَارِيَةِ
যখন জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল নিশ্চয় তখন আমরা তোমাদেরকে আরোহণ করিয়েছিলাম নৌযানে,
لِنَجْعَلَهَا لَكُمْ تَذْكِرَةً وَتَعِيَهَا أُذُنٌ وَاعِيَةٌ
আমরা এটা করেছিলাম তোমাদের শিক্ষার জন্য এবং এজন্যে যে, যাতে শ্রুতিধর কান এটা সংরক্ষণ করে।
فَإِذَا نُفِخَ فِي الصُّورِ نَفْخَةٌ وَاحِدَةٌ
অতঃপর যখন শিংগায় [১] ফুঁক দেয়া হবে ---একটি মাত্ৰ ফুঁক [২] ,
وَحُمِلَتِ الْأَرْضُ وَالْجِبَالُ فَدُكَّتَا دَكَّةً وَاحِدَةً
আর পর্বতমালা সহ পৃথিবী উৎক্ষিপ্ত হবে এবং মাত্র এক ধাক্কায় ওরা চুৰ্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে।
فَيَوْمَئِذٍ وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ
ফলে সেদিন সংঘটিত হবে মহাঘটনা,
وَانْشَقَّتِ السَّمَاءُ فَهِيَ يَوْمَئِذٍ وَاهِيَةٌ
আর আসমান বিদীর্ণ হয়ে যাবে ফলে সেদিন তা দুর্বল-বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়বে।
وَالْمَلَكُ عَلَىٰ أَرْجَائِهَا ۚ وَيَحْمِلُ عَرْشَ رَبِّكَ فَوْقَهُمْ يَوْمَئِذٍ ثَمَانِيَةٌ
আর ফেরেশ্তাগণ আসমানের প্রান্ত দেশে থাকবে এবং সেদিন আটজন ফিরিশ্তা আপনার রবের ‘আর্শকে ধারণ করবে তাদের উপরে।
يَوْمَئِذٍ تُعْرَضُونَ لَا تَخْفَىٰ مِنْكُمْ خَافِيَةٌ
সেদিন উপস্থিত করা হবে তোমাদেরকে এবং তোমাদের কোন গোপনই আর গোপন থাকবে না।
فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَيَقُولُ هَاؤُمُ اقْرَءُوا كِتَابِيَهْ
তখন যাকে তার ‘আমলনামা তার ডান হাতে দেয়া হবে, সে বলবে, ‘লও, আমার ‘আমলনামা পড়ে দেখ [১] ;
إِنِّي ظَنَنْتُ أَنِّي مُلَاقٍ حِسَابِيَهْ
‘আমি দৃঢ়বিশ্বাস করতাম যে, আমাকে আমার হিসেবের সম্মুখীন হতে হবে।’
فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَاضِيَةٍ
কাজেই সে যাপন করবে সন্তোষজনক জীবন;
فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٍ
সুউচ্চ জান্নাতে
قُطُوفُهَا دَانِيَةٌ
যার ফলরাশি অবনমিত থাকবে নাগালের মধ্যে।
كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا أَسْلَفْتُمْ فِي الْأَيَّامِ الْخَالِيَةِ
বলা হবে, ‘পানাহার কর তৃপ্তির সাথে, তোমরা অতীত দিনে যা করেছিলে তার বিনিময়ে।’
وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِشِمَالِهِ فَيَقُولُ يَا لَيْتَنِي لَمْ أُوتَ كِتَابِيَهْ
কিন্তু যার ‘আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবে, ‘হায়! আমাকে যদি দেয়াই না হত আমার ‘আমলনামা,
وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِيَهْ
আর আমি যদি না জানতাম আমার হিসেব !
يَا لَيْتَهَا كَانَتِ الْقَاضِيَةَ
‘হায়! আমার মৃত্যুই যদি আমার শেষ হত !
مَا أَغْنَىٰ عَنِّي مَالِيَهْ ۜ
‘আমার ধন-সম্পদ আমার কোন কাজেই আসল না।
هَلَكَ عَنِّي سُلْطَانِيَهْ
‘আমার ক্ষমতাও বিনষ্ট হয়েছে।’
خُذُوهُ فَغُلُّوهُ
ফেরেশ্তাদেরকে বলা হবে, ‘ধর তাকে, তার গলায় বেড়ী পরিয়ে দাও।
ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوهُ
‘তারপর তোমরা তাকে জাহান্নামে প্ৰবেশ করিয়ে দগ্ধ কর।
ثُمَّ فِي سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوهُ
‘তারপর তাকে শৃংখলিত কর এমন এক শেকলে যার দৈর্ঘ্য হবে সত্তর হাত’ [১] ,
إِنَّهُ كَانَ لَا يُؤْمِنُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ
নিশ্চয় সে মহান আল্লাহ্র প্রতি ঈমানদার ছিল না,
وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ الْمِسْكِينِ
আর মিসকীনকে অন্নদানে উৎসাহিত করত না,
فَلَيْسَ لَهُ الْيَوْمَ هَاهُنَا حَمِيمٌ
অতএব এ দিন তার কোন সুহৃদ থাকবে না,
وَلَا طَعَامٌ إِلَّا مِنْ غِسْلِينٍ
আর কোন খাদ্য থাকবে না ক্ষত নিঃসৃত স্রাব ছাড়া,
لَا يَأْكُلُهُ إِلَّا الْخَاطِئُونَ
যা অপরাধী ছাড়া কেউ খাবে না।
فَلَا أُقْسِمُ بِمَا تُبْصِرُونَ
অতএব আমি কসম করছি তার, যা তোমরা দেখতে পাও,
وَمَا لَا تُبْصِرُونَ
এবং যা তোমরা দেখতে পাওনা তারও;
إِنَّهُ لَقَوْلُ رَسُولٍ كَرِيمٍ
নিশ্চয় এ কুরআন এক সম্মানিত রাসূলের (বাহিত) বাণী [১]।
وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَاعِرٍ ۚ قَلِيلًا مَا تُؤْمِنُونَ
আর এটা কোন কবির কথা নয়; তোমরা খুব অল্পই ঈমান পোষণ করে থাক,
وَلَا بِقَوْلِ كَاهِنٍ ۚ قَلِيلًا مَا تَذَكَّرُونَ
এটা কোন গণকের কথাও নয়, তোমরা অল্পই উপদেশ গ্ৰহণ কর।
تَنْزِيلٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ
এটা সৃষ্টিকুলের রবের কাছ থেকে নাযিলকৃত।
وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْأَقَاوِيلِ
তিনি যদি আমাদের নামে কোন কথা রচনা করে চালাতে চেষ্টা করতেন,
لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِالْيَمِينِ
তবে অবশ্যই আমরা তাকে পাকড়াও করতাম ডান হাত দিয়ে [১] ,
ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ الْوَتِينَ
তারপর অবশ্যই আমরা কেটে দিতাম তার হৃদপিণ্ডের শিরা,
فَمَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَاجِزِينَ
অতঃপর তোমাদের মধ্যে এমন কেউই নেই, যে তাঁকে রক্ষা করতে পারে।
وَإِنَّهُ لَتَذْكِرَةٌ لِلْمُتَّقِينَ
আর এ কুরআন মুত্তাকীদের জন্য অবশ্যই এক উপদেশ।
وَإِنَّا لَنَعْلَمُ أَنَّ مِنْكُمْ مُكَذِّبِينَ
আর আমরা অবশ্যই জানি যে, তোমাদের মধ্যে মিথ্যা আরোপকারী রয়েছে।
وَإِنَّهُ لَحَسْرَةٌ عَلَى الْكَافِرِينَ
আর এ কুরআন নিশ্চয়ই কাফিরদের অনুশোচনার কারণ হবে,
وَإِنَّهُ لَحَقُّ الْيَقِينِ
আর নিশ্চয় এটা সুনিশ্চিত সত্য।
فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ
অতএব আপনি আপনার মহান রবের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন।