আল-মুদ্দাসসির
يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ
হে বস্ত্ৰাচ্ছাদিত! [১]
قُمْ فَأَنْذِرْ
উঠুন, অতঃপর সতর্ক করুন, [১] ,
وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ
আর আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন।
وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ
আর আপনার পরিচ্ছদ পবিত্ৰ করুন [১] ,
وَالرُّجْزَ فَاهْجُرْ
আর শির্ক পরিহার করে চলুন [১] ,
وَلَا تَمْنُنْ تَسْتَكْثِرُ
আর বেশী পাওয়ার প্রত্যাশায় দান করবেন না [১]।
وَلِرَبِّكَ فَاصْبِرْ
আর আপনার রবের জন্যেই ধৈর্য ধারণ করুন।
فَإِذَا نُقِرَ فِي النَّاقُورِ
অতঃপর যখন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে [১]
فَذَٰلِكَ يَوْمَئِذٍ يَوْمٌ عَسِيرٌ
সেদিন হবে এক সংকটের দিন-
عَلَى الْكَافِرِينَ غَيْرُ يَسِيرٍ
যা কাফিরদের জন্য সহজ নয় [১]।
ذَرْنِي وَمَنْ خَلَقْتُ وَحِيدًا
ছেড়ে দিন আমাকে ও যাকে আমি সৃষ্টি করেছি একাকী [১] ।
وَجَعَلْتُ لَهُ مَالًا مَمْدُودًا
আর আমি তাকে দিয়েছি বিপুল ধন- সম্পদ [১]
وَبَنِينَ شُهُودًا
এবং নিত্যসঙ্গী পুত্ৰগণ [১],
وَمَهَّدْتُ لَهُ تَمْهِيدًا
আর তাকে দিয়েছি স্বাচ্ছন্দ জীবনের প্রচুর উপকরণ-
ثُمَّ يَطْمَعُ أَنْ أَزِيدَ
এর পরও সে কামনা করে যে, আমি তাকে আরও বেশী দেই [১] !
كَلَّا ۖ إِنَّهُ كَانَ لِآيَاتِنَا عَنِيدًا
কখনো নয়, সে তো আমাদের নিদর্শনসমূহের বিরুদ্ধাচারী।
سَأُرْهِقُهُ صَعُودًا
অচিরেই আমি তাকে চড়ার [১] শাস্তি দিয়ে কষ্ট-ক্লান্ত করব।
إِنَّهُ فَكَّرَ وَقَدَّرَ
সে তো চিন্তা করল এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল।
فَقُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ
সুতরাং ধ্বংস হোক সে! কেমন করে সে এ সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করল !
ثُمَّ قُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ
তারপরও ধ্বংস হোক সে! কেমন করে সে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হল !
ثُمَّ نَظَرَ
তারপর সে তাকাল।
ثُمَّ عَبَسَ وَبَسَرَ
তারপর সে ভ্ৰকুঞ্চিত করল ও মুখ বিকৃত করল।
ثُمَّ أَدْبَرَ وَاسْتَكْبَرَ
তারপর সে পিছন ফিরল এবং অহংকার করল।
فَقَالَ إِنْ هَٰذَا إِلَّا سِحْرٌ يُؤْثَرُ
অতঃপর সে বলল, ‘এ তো লোক পরম্পরায় প্রাপ্ত জাদু ভিন্ন আর কিছু নয় [১] ,
إِنْ هَٰذَا إِلَّا قَوْلُ الْبَشَرِ
‘এ তো মানুষেরই কথা।’
سَأُصْلِيهِ سَقَرَ
অচিরেই আমি তাকে দগ্ধ করব ‘সাকার’ এ
وَمَا أَدْرَاكَ مَا سَقَرُ
আর আপনাকে কিসে জানাবে ‘সাকার’ কী?
لَا تُبْقِي وَلَا تَذَرُ
এটা অবশিষ্ট রাখবে না এবং ছেড়েও দেবে না [১]।
لَوَّاحَةٌ لِلْبَشَرِ
এটা তো শরীরের চামড়া পুড়িয়ে কালো করে দেবে,
عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ
‘সাকার’-এর তত্ত্বাবধানে রয়েছে ঊনিশজন প্রহরী।
وَمَا جَعَلْنَا أَصْحَابَ النَّارِ إِلَّا مَلَائِكَةً ۙ وَمَا جَعَلْنَا عِدَّتَهُمْ إِلَّا فِتْنَةً لِلَّذِينَ كَفَرُوا لِيَسْتَيْقِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ وَيَزْدَادَ الَّذِينَ آمَنُوا إِيمَانًا ۙ وَلَا يَرْتَابَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ وَالْمُؤْمِنُونَ ۙ وَلِيَقُولَ الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ وَالْكَافِرُونَ مَاذَا أَرَادَ اللَّهُ بِهَٰذَا مَثَلًا ۚ كَذَٰلِكَ يُضِلُّ اللَّهُ مَنْ يَشَاءُ وَيَهْدِي مَنْ يَشَاءُ ۚ وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلَّا هُوَ ۚ وَمَا هِيَ إِلَّا ذِكْرَىٰ لِلْبَشَرِ
আর আমরা তো জাহান্নামের প্রহরী কেবল ফেরেশ্তাদেরকেই করেছি [১]; কাফিরদের পরীক্ষাস্বরূপই আমরা তাদের এ সংখ্যা উল্লেখ করেছি যাতে কিতাবপ্রাপ্তদের দৃঢ় প্রত্যয় জন্মে, আর যারা ঈমান এনেছে তাদের ঈমান বেড়ে যায়। আর কিতাবপ্রাপ্তরা ও মুমিনরা সন্দেহ পোষণ না করে। আর যেন এর ফলে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা ও কাফিররা বলে, আল্লাহ্ এ (সংখ্যার) উপমা [২] (উল্লেখ করা) দ্বারা কি ইচ্ছা করেছেন?’ এভাবে আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছে পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছে হেদায়াত করেন। আর আপনার রবের বাহিনী সম্পর্কে তিনি ছাড়া কেউ জানে না। আর জাহান্নামের এ বর্ণনা তো মানুষের জন্য এক উপদেশ মাত্র।
كَلَّا وَالْقَمَرِ
কখনোই না [১], চাঁদের শপথ,
وَاللَّيْلِ إِذْ أَدْبَرَ
শপথ রাতের, যখন তার অবসান ঘটে,
وَالصُّبْحِ إِذَا أَسْفَرَ
শপথ প্রভাতকালের, যখন তা আলোকোজ্জ্বল হয় -
إِنَّهَا لَإِحْدَى الْكُبَرِ
নিশ্চয় জাহান্নাম ভয়াবহ বিপদসমূহের অন্যতম,
نَذِيرًا لِلْبَشَرِ
মানুষের জন্য সতর্ককারীস্বরূপ-
لِمَنْ شَاءَ مِنْكُمْ أَنْ يَتَقَدَّمَ أَوْ يَتَأَخَّرَ
তোমাদের মধ্যে যে অগ্রসর হতে চায় কিংবা যে পিছিয়ে পড়তে চায় তার জন্য [১] ।
كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ
প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের দায়ে আবদ্ধ [১] ,
إِلَّا أَصْحَابَ الْيَمِينِ
তবে ডানপন্থীরা নয়,
فِي جَنَّاتٍ يَتَسَاءَلُونَ
বাগ-বাগিচার মধ্যে তারা একে অপরকে জিজ্ঞেস করবে –
عَنِ الْمُجْرِمِينَ
অপরাধীদের সম্পর্কে,
مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرَ
‘তোমাদেরকে কিসে ‘সাকার’- এ নিক্ষেপ করেছে?’
قَالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ
তারা বলবে ‘আমরা সালাত আদায়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না [১] ,
وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِينَ
আর আমরা অভাবগ্ৰস্তকে খাদ্য দান করতাম না [১] ,
وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ الْخَائِضِينَ
এবং আমরা অনর্থক আলাপকারীদের সাথে বেহুদা আলাপে মগ্ন থাকতাম।
وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّينِ
‘আর আমরা প্রতিদান দিবসে মিথ্যারোপ করতাম,
حَتَّىٰ أَتَانَا الْيَقِينُ
‘অবশেষে আমাদের কাছে মৃত্যু আগমন করে [১]। ’
فَمَا تَنْفَعُهُمْ شَفَاعَةُ الشَّافِعِينَ
ফলে সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোন উপকার করবে না [১]।
فَمَا لَهُمْ عَنِ التَّذْكِرَةِ مُعْرِضِينَ
অতঃপর তাদের কী হয়েছে যে, তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় উপদেশ হতে?
كَأَنَّهُمْ حُمُرٌ مُسْتَنْفِرَةٌ
তারা যেন ভীত-ত্ৰস্ত হয়ে পলায়নরত একপাল গাধা-
فَرَّتْ مِنْ قَسْوَرَةٍ
যারা সিংহের ভয়ে পলায়ন করেছে [১] ।
بَلْ يُرِيدُ كُلُّ امْرِئٍ مِنْهُمْ أَنْ يُؤْتَىٰ صُحُفًا مُنَشَّرَةً
বরং তাদের মধ্যকার প্রত্যেকেই কামনা করে যে, তাকে একটি উন্মুক্ত গ্ৰন্থ দেয়া হোক [১]।
كَلَّا ۖ بَلْ لَا يَخَافُونَ الْآخِرَةَ
কখনো নয় [১]; বরং তারা আখেরাতকে ভয় করে না [২]।
كَلَّا إِنَّهُ تَذْكِرَةٌ
নিশ্চয় এ কুরআন তো সকলের জন্য উপদেশবাণী [১]।
فَمَنْ شَاءَ ذَكَرَهُ
অতএব যার ইচ্ছে সে তা থেকে উপদেশ গ্ৰহণ করুক।
وَمَا يَذْكُرُونَ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ اللَّهُ ۚ هُوَ أَهْلُ التَّقْوَىٰ وَأَهْلُ الْمَغْفِرَةِ
আর আল্লাহ্র ইচ্ছে ছাড়া কেউ উপদেশ গ্ৰহণ করতে পারে না; তিনিই যোগ্য যে, একমাত্র তাঁরই তাকওয়া অবলম্বন করা হবে, আর তিনিই ক্ষমা করার অধিকারী [১]।