আন-নাযি'আত
وَالنَّازِعَاتِ غَرْقًا
শপথ [১] নির্মমভাবে উৎপাটনকারীদের [২] ,
وَالنَّاشِطَاتِ نَشْطًا
আর মৃদুভাবে বন্ধনমুক্তকারীদের [১]
وَالسَّابِحَاتِ سَبْحًا
আর তীব্ৰ গতিতে সন্তরণকারীদের [১] ,
فَالسَّابِقَاتِ سَبْقًا
আর দ্রুতবেগে অগ্রসরমানদের [১] ,
فَالْمُدَبِّرَاتِ أَمْرًا
অতঃপর সব কাজ নির্বাহকারীদের [১]।
يَوْمَ تَرْجُفُ الرَّاجِفَةُ
সেদিন প্রকম্পিতকারী প্রকম্পিত করবে,
تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ
তাকে অনুসরণ করবে পরবর্তী কম্পনকারী [১] ,
قُلُوبٌ يَوْمَئِذٍ وَاجِفَةٌ
অনেক হৃদয় সেদিন সন্ত্রস্ত হবে [১] ,
أَبْصَارُهَا خَاشِعَةٌ
তাদের দৃষ্টিসমূহ ভীতি-বিহ্বলতায় নত হবে।
يَقُولُونَ أَإِنَّا لَمَرْدُودُونَ فِي الْحَافِرَةِ
তারা বলে, ‘আমরা কি আগের অবস্থায় ফিরে যাবই---
أَإِذَا كُنَّا عِظَامًا نَخِرَةً
চূৰ্ণবিচূর্ণ অস্থিতে পরিণত হওয়ার পরও?’
قَالُوا تِلْكَ إِذًا كَرَّةٌ خَاسِرَةٌ
তারা বলে, ‘তাই যদি হয় তবে তো এটা এক সর্বনাশা প্ৰত্যাবর্তন।’
فَإِنَّمَا هِيَ زَجْرَةٌ وَاحِدَةٌ
এ তো শুধু এক বিকট আওয়াজ [১] ,
فَإِذَا هُمْ بِالسَّاهِرَةِ
তখনই ময়দানে [১] তাদের আবির্ভাব হবে।
هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ مُوسَىٰ
আপনার কাছে মূসার বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি [১] ?
إِذْ نَادَاهُ رَبُّهُ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى
যখন তাঁর রব পবিত্র উপত্যকা ‘তুওয়া’য় তাঁকে ডেকে বলেছিলেন,
اذْهَبْ إِلَىٰ فِرْعَوْنَ إِنَّهُ طَغَىٰ
‘ফির‘আউনের কাছে যান, সে তো সীমালঙ্ঘন করেছে, ’
فَقُلْ هَلْ لَكَ إِلَىٰ أَنْ تَزَكَّىٰ
অতঃপর বলুন, ‘তোমার কি আগ্ৰহ আছে যে, তুমি পবিত্র হও—
وَأَهْدِيَكَ إِلَىٰ رَبِّكَ فَتَخْشَىٰ
‘আর আমি তোমাকে তোমার রবের দিকে পথপ্রদর্শন করি, যাতে তুমি তাঁকে ভয় কর ?’
فَأَرَاهُ الْآيَةَ الْكُبْرَىٰ
অতঃপর তিনি তাকে মহানিদর্শন দেখালেন [১]।
فَكَذَّبَ وَعَصَىٰ
কিন্তু সে মিথ্যারোপ করল এবং অবাধ্য হল।
ثُمَّ أَدْبَرَ يَسْعَىٰ
তারপর সে পিছনে ফিরে প্রতিবিধানে সচেষ্ট হল [১]।
فَحَشَرَ فَنَادَىٰ
অতঃপর সে সকলকে সমবেত করে ঘোষণা দিল,
فَقَالَ أَنَا رَبُّكُمُ الْأَعْلَىٰ
অতঃপর বলল, ‘আমিই তোমাদের সর্বোচ্চ রব।’
فَأَخَذَهُ اللَّهُ نَكَالَ الْآخِرَةِ وَالْأُولَىٰ
অতঃপর আল্লাহ্ তাকে আখেরাতে ও দুনিয়ায় কঠিন শাস্তিতে পাকড়াও করলেন [১]।
إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَعِبْرَةً لِمَنْ يَخْشَىٰ
নিশ্চয় যে ভয় করে তার জন্য তো এতে শিক্ষা রয়েছে।
أَأَنْتُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمِ السَّمَاءُ ۚ بَنَاهَا
তোমাদেরকে [১] সৃষ্টি করা কঠিন, না আসমান সৃষ্টি? তিনিই তা নির্মাণ করেছেন [২];
رَفَعَ سَمْكَهَا فَسَوَّاهَا
তিনি এর ছাদকে সুউচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন।
وَأَغْطَشَ لَيْلَهَا وَأَخْرَجَ ضُحَاهَا
আর তিনি এর রাতকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং প্ৰকাশ করেছেন এর সূর্যালোক;
وَالْأَرْضَ بَعْدَ ذَٰلِكَ دَحَاهَا
আর যমীনকে এর পর বিস্তৃত করেছেন [১]।
أَخْرَجَ مِنْهَا مَاءَهَا وَمَرْعَاهَا
তিনি তা থেকে বের করেছেন তার পানি ও তৃণভূমি,
وَالْجِبَالَ أَرْسَاهَا
আর পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করেছেন;
مَتَاعًا لَكُمْ وَلِأَنْعَامِكُمْ
এসব তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুগুলোর ভোগের জন্য।
فَإِذَا جَاءَتِ الطَّامَّةُ الْكُبْرَىٰ
অতঃপর যখন মহাসংকট উপস্থিত হবে [১]
يَوْمَ يَتَذَكَّرُ الْإِنْسَانُ مَا سَعَىٰ
মানুষ যা করেছে তা সে সেদিন স্মরণ করবে,
وَبُرِّزَتِ الْجَحِيمُ لِمَنْ يَرَىٰ
আর প্রকাশ করা হবে জাহান্নাম দর্শকদের জন্য,
فَأَمَّا مَنْ طَغَىٰ
সুতরাং যে সীমালঙ্ঘন করে,
وَآثَرَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا
এবং দুনিয়ার জীবনকে অগ্ৰাধিকার দেয়।
فَإِنَّ الْجَحِيمَ هِيَ الْمَأْوَىٰ
জাহান্নামই হবে তার আবাস [১]।
وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ وَنَهَى النَّفْسَ عَنِ الْهَوَىٰ
আর যে তার রবের অবস্থানকে [১] ভয় করে এবং কুপ্রবৃত্তি হতে নিজকে বিরত রাখে,
فَإِنَّ الْجَنَّةَ هِيَ الْمَأْوَىٰ
জান্নাতই হবে তার আবাস।
يَسْأَلُونَكَ عَنِ السَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَاهَا
তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে, ‘কিয়ামত সম্পর্কে, তা কখন ঘটবে?’
فِيمَ أَنْتَ مِنْ ذِكْرَاهَا
তা আলোচনার কি জ্ঞান আপনার আছে ?
إِلَىٰ رَبِّكَ مُنْتَهَاهَا
এর পরম জ্ঞান আপনার রবেরই কাছে [১];
إِنَّمَا أَنْتَ مُنْذِرُ مَنْ يَخْشَاهَا
যে এটার ভয় রাখে আপনি শুধু তার সতর্ককারী।
كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَهَا لَمْ يَلْبَثُوا إِلَّا عَشِيَّةً أَوْ ضُحَاهَا
যেদিন তারা তা দেখতে পাবে সেদিন তাদের মনে হবে যেন তারা দুনিয়ায় মাত্ৰ এক সন্ধ্যা অথবা এক প্ৰভাত অবস্থান করেছে [১] !